জন পরিসংখ্যান

- পরিসংখ্যান - পরিসংখ্যান ২য় পত্র | | NCTB BOOK

আপনি যদি জন পরিসংখ্যান বা Statistics সম্পর্কিত আলোচনা করতে চান, তা এইচএসসি (Higher Secondary Certificate) পরিসংখ্যান বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর মধ্যে বিভিন্ন ধারণা, সূত্র এবং তাদের ব্যবহার শিখানো হয়।

এখানে কিছু মূল বিষয় ও উপ-বিষয় দেয়া হল যা সাধারণত জন পরিসংখ্যান এর পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত থাকে:

১. পরিসংখ্যানের মৌলিক ধারণা

  • পরিসংখ্যান কী?
  • পরিসংখ্যানের উদ্দেশ্য
  • পরিসংখ্যানের ব্যবহার

২. ডেটা সংগ্রহ

  • সার্ভে পদ্ধতি
  • সমীক্ষা, প্রশ্নমালা ও ইন্টারভিউ

৩. ডেটা উপস্থাপন

  • সারণী
  • বার গ্রাফ
  • পাই চার্ট
  • হিস্টোগ্রাম

৪. ভিক্তিগত পরিসংখ্যান

  • গড় (Mean)
  • মধ্যক (Median)
  • প্রকৃত গড় (Mode)

৫. পরিবর্তনশীলতা ও বিচ্যুতি

  • পরিসরের ব্যপ্তি (Range)
  • বিচ্যুতি (Variance)
  • স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন

৬. সম্ভাব্যতা তত্ত্ব

  • প্রাথমিক ধারণা
  • সম্ভাব্যতার সূত্র

৭. সমষ্টিগত পরিসংখ্যান

  • পিয়ারসন সম্পর্ক (Correlation)
  • রিগ্রেশন বিশ্লেষণ

এই বিষয়গুলোর আলোচনায় যে কোন একটি ধারণার গভীরে গিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করা সম্ভব, যা পরবর্তীতে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায়। আপনি যদি বিশেষ কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চান, আমাকে জানাতে পারেন।

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

তথ্যের আলোকে প্রশ্নের উত্তর দাও

2014 ও 2016 সালে প্রতি কেজি চালের মূল্য ছিল যথাক্রমে 40 টাকা ও 50 টাকা এবং উক্ত সময়ে কোনো একটি পরিবারের মাস প্রতি ব্যবহৃত চালের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে 46 কেজি এবং 50 কেজি।

তথ্যের আলোকে প্রশ্নের উত্তর দাও

এক লিটার কোকাকোলার দাম 2010 ও 2014 সালে যথাক্রমে 55 ও 60 টাকা ছিল।

তথ্যের আলোকে শ্নের উত্তর দাও

কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে রহিম ও করিম চাকুরি করেন। রহিমের মাসিক আয় ২৪,০০০ টাকা এবং জীবনযাত্রার ব্যয় সূচক সংখ্যা ১২০। অন্যদিকে, করিমের মাসিক আয় ২৫,০০০ টাকা এবং জীবনযাত্রার ব্যয় সূচক সংখ্যা ১২৫।

জন পরিসংখ্যান ও বিভিন্ন উৎসের ধারণা

Please, contribute by adding content to জন পরিসংখ্যান ও বিভিন্ন উৎসের ধারণা.
Content

নির্ভরশীলতার অনুপাত ও জনসংখ্যার ঘনত্ব

নির্ভরশীলতার অনুপাত (Dependency Ratio) এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব (Population Density) এই দুটি পরিসংখ্যানগত ধারণা জন পরিসংখ্যানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নিচে তাদের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়া হলো:

১. নির্ভরশীলতার অনুপাত (Dependency Ratio)

নির্ভরশীলতার অনুপাত একটি দেশের কর্মক্ষম জনগণের (অর্থাৎ, ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী জনগণ) তুলনায় নির্ভরশীল জনগণের (১৫ বছরের নিচে বা ৬৫ বছরের উপরের জনগণ) সংখ্যা কত তা নির্দেশ করে। এটি মূলত জনসংখ্যার কর্মক্ষম অংশের উপর চাপ বা নির্ভরশীল জনগণের সংখ্যা বুঝাতে ব্যবহৃত হয়।

নির্ভরশীলতার অনুপাত গণনা:

নির্ভরশীলতার অনুপাত সাধারণত দুইটি অংশে ভাগ করা হয়:

  1. শিশু নির্ভরশীলতা (Child Dependency Ratio): ১৫ বছরের নিচে বয়সী জনগণের সংখ্যা মোট কর্মক্ষম জনগণের (১৫-৬৪ বছর) তুলনায়।

  2. বৃদ্ধ নির্ভরশীলতা (Old Age Dependency Ratio): ৬৫ বছরের উপরের জনগণের সংখ্যা মোট কর্মক্ষম জনগণের তুলনায়।

নির্ভরশীলতার সাধারণ ধারণা:

  • একটি উচ্চ নির্ভরশীলতার অনুপাত মানে হচ্ছে কম কর্মক্ষম জনসংখ্যার তুলনায় বেশী নির্ভরশীল জনগণ, যা দেশটির অর্থনৈতিক চাহিদাকে চাপের মধ্যে ফেলতে পারে।
  • একটি কম নির্ভরশীলতার অনুপাত সাধারণত দেশের জন্য ভাল, কারণ এটি কর্মক্ষম জনগণের সংখ্যা বাড়াতে সহায়ক।

২. জনসংখ্যার ঘনত্ব (Population Density)

জনসংখ্যার ঘনত্ব একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে বাস করা জনগণের সংখ্যা বুঝাতে ব্যবহৃত হয়। এটি নির্ধারণ করা হয় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বা প্রতি বর্গ মাইলের মধ্যে কতজন লোক বসবাস করছে তা দিয়ে।

জনসংখ্যার ঘনত্ব গণনা:

উদাহরণ:

ধরা যাক, একটি দেশের মোট জনসংখ্যা ১০০০,০০০ এবং দেশের মোট আয়তন ৫০,০০০ বর্গ কিলোমিটার।
তাহলে জনসংখ্যার ঘনত্ব হবে:

জনসংখ্যার ঘনত্বের গুরুত্বপূর্ণ ধারণা:

  • একটি উচ্চ জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রমাণ করে যে, একটি অঞ্চলে জনগণের সংখ্যা অনেক বেশি এবং জমি কম। এটি সাধারণত শহরাঞ্চলে দেখা যায়।
  • একটি কম জনসংখ্যার ঘনত্বের মানে হল যে, অঞ্চলের মধ্যে বসবাসকারীদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম, যা সাধারণত গ্রামাঞ্চলে হয়ে থাকে।

সংক্ষেপে, নির্ভরশীলতার অনুপাত জনসংখ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, যা দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক কাঠামোকে প্রভাবিত করে। অপরদিকে, জনসংখ্যার ঘনত্ব একটি অঞ্চলের জনসংখ্যা কীভাবে বিস্তৃত তা বোঝায়, যা অঞ্চলটির বাসযোগ্যতা এবং উন্নয়ন পরিকল্পনায় সহায়তা করে।

প্রজনন হার

প্রজনন হার (Reproductive Rate) বা জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার জনসংখ্যার বৃদ্ধি বা হ্রাসের মাপকাঠি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি একটি দেশের বা অঞ্চলের জনসংখ্যার গঠন ও বৃদ্ধির বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।

প্রজনন হার (Reproductive Rate) এর মূল ধারণা:

প্রজনন হার মূলত গর্ভবতী মহিলাদের মাধ্যমে সৃষ্ট সন্তানের সংখ্যা নির্ধারণ করে এবং তা জনসংখ্যার বৃদ্ধি বা হ্রাসের সাথে সম্পর্কিত। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান যেটি জনসংখ্যার ভবিষ্যত প্রবৃদ্ধি বা হ্রাসের পূর্বাভাস প্রদান করতে পারে।

প্রধান ধরনের প্রজনন হার:

১. মৌলিক প্রজনন হার (Total Fertility Rate - TFR):
এটি একটি নারী বা মহিলার জীবনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে, প্রজননযোগ্য বয়সের (১৫ থেকে ৪৯ বছর) মধ্যে তার গড় সন্তান ধারণের সংখ্যা নির্দেশ করে। যদি TFR ২.১ হয়, তা মানে জনসংখ্যা নিজস্ব স্থিতিশীল অবস্থায় থাকবে, কারণ একটি পরিবারে গড়ে ২.১ সন্তানের জন্ম হতে হবে যাতে পুরনো প্রজন্মের স্থান নতুন প্রজন্ম পূর্ণ করতে পারে।

২. নেট প্রজনন হার (Net Reproductive Rate - NRR):
নেট প্রজনন হার TFR এর একটি সংশোধিত সংস্করণ, যেখানে মৃত্যুর হার এবং অন্যান্য কারণে জন্মের পরে বেঁচে থাকার হারও যোগ করা হয়। এটি একটি দেশের বা অঞ্চলের জনসংখ্যার বিকাশের জন্য আরও নির্ভুল পূর্বাভাস দেয়।

প্রজনন হার থেকে বোঝা যায়:

  • প্রজনন হার বেশি: যদি প্রজনন হার বেশি হয়, এটি মানে যে জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাধারণত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রজনন হার বেশি হয়।
  • প্রজনন হার কম: যদি প্রজনন হার কম হয়, তাহলে জনসংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে থাকে, এবং এটি উন্নত দেশগুলোর মধ্যে বেশি দেখা যায়।

প্রজনন হার এর গুরুত্ব:

  1. জনসংখ্যার বৃদ্ধির পূর্বাভাস: প্রজনন হার একটি দেশের বা অঞ্চলের ভবিষ্যত জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা দেয়।
  2. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা: এটি সরকারের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি বিষয়ে পরিকল্পনা করতে সাহায্য করে।
  3. বয়সভিত্তিক কাঠামো: এটি একটি দেশের প্রাপ্তবয়স্ক জনগণের সংখ্যা এবং বৃদ্ধ জনগণের সংখ্যা নির্ধারণে সাহায্য করে।

সংক্ষেপে, প্রজনন হার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান যা জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার, কর্মক্ষম জনসংখ্যার পরিমাণ এবং দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় ভূমিকা রাখে।

মুত্যু হার

মৃত্যু হার (Death Rate) বা মৃত্যু অনুপাত একটি পরিসংখ্যান যা কোন একটি অঞ্চলের বা দেশের মধ্যে বছরে কতজন মানুষ মারা যায় তা নির্দেশ করে। এটি একটি দেশের বা অঞ্চলের জনসংখ্যার স্বাস্থ্য এবং জীবনের মান সম্পর্কে ধারণা দেয়।

মৃত্যু হার (Death Rate) এর মূল ধারণা:

মৃত্যু হার সাধারণত প্রতি ১,০০০ জনের জন্য প্রতি বছর কতজন মানুষ মারা যাচ্ছে, তা হিসাবে পরিমাপ করা হয়। এটি জনসংখ্যার স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ব্যবস্থা, জীবনযাত্রার মান, এবং অন্যান্য সামাজিক-অর্থনৈতিক কারণগুলির সঙ্গে সম্পর্কিত। মৃত্যু হার কম হলে তা সাধারণত দেশের উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং জীবনযাত্রার মানের প্রমাণ হতে পারে, এবং উল্টোটাও সত্য।

মৃত্যু হার গণনা:

মৃত্যু হার সাধারণত এই সূত্রে গণনা করা হয়:

এখানে:

  • মৃত্যুর মোট সংখ্যা: নির্দিষ্ট সময়ে, যেমন এক বছরে, যে সংখ্যক মৃত্যু ঘটেছে।
  • মোট জনসংখ্যা: ওই সময়ের মধ্যে ওই দেশের বা অঞ্চলের মোট জনসংখ্যা।

উদাহরণ:

ধরা যাক, একটি দেশে বছরে ৫,০০০ মৃত্যু ঘটে এবং দেশটির মোট জনসংখ্যা ১০,০০,০০০। তাহলে মৃত্যু হার হবে:

মৃত্যু হার এর প্রকারভেদ:

১. যাবতীয় মৃত্যু হার (Crude Death Rate - CDR):
এটি মৌলিক মৃত্যু হার, যেখানে কোন ভেদাভেদ ছাড়াই মোট মৃত্যু সংখ্যাকে জনসংখ্যার সাথে সম্পর্কিত করা হয়।

২. বিশেষ বয়স ভিত্তিক মৃত্যু হার (Age-Specific Death Rate - ASDR):
এটি নির্দিষ্ট বয়সের জনগণের মৃত্যুহার হিসাব করে, যেমন শিশু, বয়স্ক বা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য।

৩. বিশেষ কারণ ভিত্তিক মৃত্যু হার (Cause-Specific Death Rate):
এটি কোন নির্দিষ্ট রোগ বা কারণে মৃত্যু হওয়ার হার হিসাব করে, যেমন হৃদরোগ, ক্যান্সার, বা দুর্ঘটনা।

মৃত্যু হার এর গুরুত্ব:

  1. স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন: মৃত্যু হার এক দেশের বা অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতি বুঝতে সহায়তা করে। যেমন, উচ্চ মৃত্যু হার সাধারণত খারাপ স্বাস্থ্যসেবা, অপুষ্টি, রোগ বা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের ইঙ্গিত হতে পারে।
  2. জনসংখ্যার কাঠামো: উচ্চ মৃত্যু হার বৃদ্ধ বা শিশু মৃত্যু হার একটি দেশের জনসংখ্যার গঠন পরিবর্তন করতে পারে। এটি জনসংখ্যার বয়স কাঠামোকে প্রভাবিত করে, বিশেষ করে শিশু বা বৃদ্ধদের হার।
  3. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা: মৃত্যু হার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ এটি জীবনযাত্রার মান এবং দেশের ভবিষ্যত শ্রমশক্তি নির্ধারণে সাহায্য করে।

উচ্চ মৃত্যু হার এবং নিম্ন মৃত্যু হার:

  • উচ্চ মৃত্যু হার: উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বেশি দেখা যায়, যেখানে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা দুর্বল, সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি, এবং গর্ভবতী মহিলাদের মৃত্যুহার বেশি।
  • নিম্ন মৃত্যু হার: উন্নত দেশগুলোতে, যেখানে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা বেশি থাকে, ফলে মানুষের গড় আয়ু বেশি হয় এবং মৃত্যুহার কম থাকে।

মৃত্যু হার একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান যা সমাজের স্বাস্থ্যগত অবস্থা এবং জীবনযাত্রার মানের সাথে সম্পর্কিত।

স্থানান্তর

স্থানান্তর (Migration) হল মানুষের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাফেরা বা বসবাসের পরিবর্তন। এটি সাধারণত দেশের মধ্যে বা দেশের বাইরেও হতে পারে। স্থানান্তর বিভিন্ন কারণে ঘটে, যেমন উন্নত জীবনের আশা, চাকরির সুযোগ, নিরাপত্তা, বা শিক্ষার উদ্দেশ্যে।

স্থানান্তরের প্রধান ধরন:

স্থানান্তরকে সাধারণত দুইটি প্রধান শ্রেণীতে ভাগ করা হয়:

১. অভ্যন্তরীণ স্থানান্তর (Internal Migration)

এটি এক দেশের মধ্যে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া। উদাহরণস্বরূপ, একটি শহর থেকে অন্য শহরে অথবা একটি গ্রাম থেকে শহরে মানুষের স্থানান্তর। অভ্যন্তরীণ স্থানান্তরের দুটি ধরন হতে পারে:

  • রুরাল-আরবান স্থানান্তর (Rural-Urban Migration): গ্রামাঞ্চল থেকে শহরাঞ্চলে স্থানান্তর। এটি সাধারণত উন্নত জীবনের সন্ধানে ঘটে থাকে।
  • শহর-শহর স্থানান্তর (Urban-Urban Migration): এক শহর থেকে অন্য শহরে স্থানান্তর।

২. আন্তর্জাতিক স্থানান্তর (International Migration)

এটি এক দেশ থেকে অন্য দেশে স্থানান্তর। উদাহরণস্বরূপ, কর্মসংস্থান, শিক্ষার উদ্দেশ্যে বা রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য দেশের সীমা অতিক্রম করা। আন্তর্জাতিক স্থানান্তর হতে পারে:

  • ইমিগ্রেশন (Immigration): অন্য দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে আসা।
  • এমিগ্রেশন (Emigration): নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে চলে যাওয়া।

স্থানান্তরের কারণ:

স্থানান্তরের কারণগুলি বেশ বৈচিত্র্যময় এবং এগুলি ব্যক্তির জীবনযাত্রা এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক বা রাজনৈতিক অবস্থার ওপর নির্ভরশীল। কিছু প্রধান কারণ হল:

  • অর্থনৈতিক সুযোগ: অধিক কাজের সুযোগ, উচ্চ বেতন বা জীবিকার উন্নতি।
  • শিক্ষা: উন্নত শিক্ষার সুযোগ বা বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য স্থানান্তর।
  • রাজনৈতিক বা ধর্মীয় কারণ: রাজনৈতিক অব্যবস্থা, যুদ্ধ, ধর্মীয় বা জাতিগত নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা।
  • পারিবারিক বা সামাজিক কারণে: পরিবার বা আত্মীয়দের কাছে যাওয়ার জন্য স্থানান্তর।
  • প্রাকৃতিক দুর্যোগ: বন্যা, ভূমিকম্প, বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর।

স্থানান্তরের ফলাফল:

স্থানের পরিবর্তন মানুষের জীবনে বিভিন্ন রকম প্রভাব ফেলে। এর কিছু ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক রয়েছে:

  • ইতিবাচক প্রভাব:
    • কর্মসংস্থান, জীবনযাত্রার মান ও শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি।
    • সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বৃদ্ধি।
  • নেতিবাচক প্রভাব:
    • সামাজিক বা সাংস্কৃতিক অখণ্ডতার অভাব।
    • স্থানান্তরিত ব্যক্তির জন্য নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া কঠিন হতে পারে, যেমন ভাষা, সংস্কৃতি বা পরিবেশের সাথে সমস্যা।
    • অভ্যন্তরীণ স্থানান্তর হলে, গ্রামের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং শহরের অতিরিক্ত জনসংখ্যা সৃষ্টি হতে পারে।

স্থানান্তরের সমাধান:

প্রধানত রাষ্ট্র এবং সরকারগুলোর উচিত স্থানান্তরিত জনগণের জন্য উন্নত ব্যবস্থা ও সহায়তা প্রদান করা, যেমন:

  • স্থানান্তরিত ব্যক্তিদের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা।
  • কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি।
  • সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প এবং তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা।

এভাবে স্থানান্তর মানব সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এবং এটি একটি দেশের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক কাঠামোকে প্রভাবিত করতে পারে।

Promotion